নিউজ ডেস্ক: বরিশালে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে ইউপি সদস্য সহ নামধারী সাতজন ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনের বিরুদ্বে মামলা দায়ের করেছেন এক সাংবাদিক।
গত ৮ ডিসেম্বর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন গণমাধ্যমকর্মী মোঃ আসাদুজ্জামান শেখ। মামলা নং- বিপি ০৫ /২৮১ ।
তিনি বহুল প্রচলিত সরকারী মিডিয়া (ডিএফপি) তালিকাভুক্ত স্থানীয় প্রাচীন দৈনিক সত্য সংবাদ পত্রিকার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক পদে কর্মরত রয়েছেন।
মামলায় আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মুকুন্দপট্রি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সোহাগ, বাবুল হাওলাদারের ছেলে মোঃ সাকিব, মৃত কেরামত আলী খানের ছেলে মোঃ ফিরোজ খান, মৃত সরুপ আলী হাওলাদারের ছেলে মোঃ সাদ্দাম, মৃত জয়নাল হাওলাদারের ছেলে মোঃ লিটন, মৃত কেয়ামত আলী খানের ছেলে রিপন খান ও মৃত খালেকের ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম।
মামলা সুত্রে জানা যায়, বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মুকুন্দপট্রি গ্রামের স্থানীয় মোহাম্মদ আলী খান ও প্রতিবেশী হারুন খানের সাথে দীর্ঘ বছর যাবৎ জমি-জমা ও চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ বিরোধ রুপ নেয় সংঘাতে। আর এমন তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সাংবাদিক আসাদসহ আরও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী।
তারা ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে জ্ঞাত ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহাগের নেতৃত্বে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত আনুমানিক ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী চড়াও হয়।
এসময় সাংবাদিক আসাদের মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন তারা। একইসময়ে আসাদের সহকর্মী মোঃ সোহেল রানা, আজিজুল মোল্লা ও সোহেল মাহমুদকে বেধরক পিটিয়ে জখম করে অভিযুক্তরা।
এছাড়া তাদের সাথে থাকা ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা মুল্যের একটি ভিডিও ক্যামেরা ও ১৫ হাজার টাকা মুল্যের দুটি বুমও ছিনিয়ে নেয় তারা।
সুত্রে আরও জানা যায়, সাংবাদিকদের কুপিয়ে ও বেধরক পিটিয়েই ক্ষ্যন্ত হননি স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহাগ ও তার নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহীনি। হামলার পর পুনরায় জমি বিরোধের ঐ ঘটনায় তথ্য সংগ্রহে গেলে ভুক্তভুগী সাংবাদিকদের প্রাণনাশেরও হুমকি প্রদান করেন তারা।
এদিকে ন্যাক্কারজনক হামলার বিষয়টি অবহিত হয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান আরও বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী। তারা স্থানীয়দের সহায়তা সাংবাদিক আসাদ সহ আহতদের উদ্বার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসময় সাংবাদিকের আসাদ ও সোহেল মাহমুদের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাদেরকে ভর্তি সহ আজিজুল ও সোহেলকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান জানান, ইউপি সদস্যের আড়ালে চরবাড়িয়া ইউনিয়নে মাদকের একটি বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন সোহাগ। মাদক সংশ্লিস্টতা সহ আরও নানাবিধ কুকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্বে। জনপ্রতিনিধির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে অপরাধের স্বর্গরাজ্য বাস্তবায়নে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী পুষে পুরো চরবাড়িয়া ইউনিয়ন জুড়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন তিনি। তার বিরুদ্বে অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।