নিম্নে রোজাকে পরিপূর্ণ ও অর্থবহ করে তোলার কিছু আমল তুলে ধরা হলো—
সাহরি খাওয়া : পবিত্র রমজানে সাহরি খাওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। এতে মহান আল্লাহ অফুরন্ত বরকত রেখেছেন। (বুখারি, হা: ১৯২৩)
তা ছাড়া সাহরি খাওয়ার মধ্য দিয়ে দিনের বেলা রোজা রাখা আরেকটু সহজ হয়।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৯৩)
সূর্যাস্ত নিশ্চিত হয়ে দ্রুত ইফতার করা : রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘লোকেরা যত দিন ইফতার দ্রুত করবে তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৭)
অধিক পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত
করা : জিবরাইল (আ.) প্রতি রাতে নবী (সা.)-এর সঙ্গে কোরআন চর্চা করতেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, …রমজানের প্রতি রাতেই জিবরাইল (আ.) তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন এবং তাঁরা একে অপরকে কোরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন।
(বুখারি, হাদিস : ৬)
তাই আমাদেরও কোরআন অধ্যয়ন ও আমলে মনোযোগী হওয়া উচিত।
রাত জেগে ইবাদত করা : রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩৭)
মিথ্যা ও গিবত থেকে বিরত থাকা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এই পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
রাগান্বিত না হওয়া : রোজা মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখানোর জন্য। তাই রোজা অবস্থায় রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
(বুখারি, হাদিস : ১৮৯৪)
তাকওয়া অর্জন করা : কারণ রোজার মূল উদ্দেশ্যই হলো, তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহ বলেছেন, ‘যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৩)
রমজানের শিক্ষা সারা বছর ধরে
রাখা : রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য শুধু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সংযম অনুশীলন করা নয়, বরং তাকওয়া ও আত্মনিয়ন্ত্রণের গুণ অর্জন করা, যা সারা বছর কাজে লাগানো।
সব ধরনের কুপ্রবৃত্তি থেকে বিরত রাখা : জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা.) বলেছেন, ‘যখন তুমি রোজা রাখবে, তখন তোমার কান, চোখ ও জিহ্বা—সব কিছু যেন মিথ্যা ও গুনাহ থেকে রোজা রাখে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাঈবা : ৪/৮)
হালাল রিজিক আহার করা : হারাম থেকে বিরত থাকা সব সময়ই জরুরি, তবে রমজানে এটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রোজা রেখে হারাম উপার্জনের খাবারে ইফতার করা অর্থহীন।
দান-সদকা করা : রাসুল (সা.) সর্বদা দানশীল ছিলেন, তবে রমজানে তিনি আরো বেশি উদারতা দেখাতেন। (বুখারি, হাদিস : ৬)
ইফতারের সময় দোয়া করো : কারণ মহান আল্লাহ রোজাদারের দোয়া ফিরিয়ে দেন না।
মহান আল্লাহ উল্লিখিত আমলগুলোর মাধ্যমে আমাদের রোজাকে আরো প্রাণবন্ত ও অর্থবহ করে তোলার তাওফিক দান করুন। আমিন।