মো: এমদাদুল কাসেম সেন্টু, উজিরপুর প্রতিনিধি :বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম শাতলা গ্রামে মায়ের দোয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে এক তরুণী স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ মরাদেহ উদ্ধার করে বরিশাল শেরে – বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছেন। মৃতের স্বজনদের অভিযোগ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে কথা না বলেই অস্ত্রোপচার করাতে নেয় এবং পরবর্তীতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তরুণীর মৃত্যু হয়। মৃত তরুনী স্কুলছাত্রীর সুমাইয়া আক্তার (১৭) আগৈলঝাড়া উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মো: হেলাল মীরের কন্যা বলে জানিয়েছেন থানা পুলিশ। ১১ মে শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ১১ টায় উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সাতলা মায়ের দোয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। মৃতের ভাই রবিউল মীর জানান, সুমাইয়ার পেটের ডান পাশে ব্যথা অনুভব হলে শনিবার বিকেল ৫ টার মায়ের দোয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসেন তারা। পরে কোন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে জানিয়ে সুমাইয়াকে রাত সাড়ে ৮ টায় ক্লিনিকের লোকজন অস্ত্রোপচার করতে নিয়ে যায়। সেখানে গোপালগঞ্জ থেকে আসা চিকিৎসক সাধন বসু ছাত্রী সুমাইয়ার অস্ত্রোপচার করেন। রাত সোয়া ৯ টার দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে ডা. সাধন বসু জানান সুমাইয়ার অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সুমাইয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করেন । চিকিৎসক সাধন বসুর নাম্বারটি বন্ধ পাওয়ায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি । উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: তৌহিদুজ্জামান সোহাগ জানান খবর পেয়ে থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্হানে গিয়ে ক্লিনিক থেকে তরুণীর মরাদেহ উদ্ধার করে রাত ২ টায় থানায় নিয়ে আসি । স্বজনরা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি মরদেহের ময়না তদন্ত করার জন্য বরিশাল শেরে – বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হছেছে । এদিকে স্বজনরা জানিয়েছেন, কোন ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই ক্লিনিকের লোকজন সুমাইয়ার অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যাথা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা স্বজনদের জিজ্ঞাসা না করেই অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় এবং অস্ত্রোপচার করেন। তাদের দাবি রোগ না শনাক্ত করে অস্ত্রোপচার করায় মৃত্যু হয়েছে। আরো জানান সুমাইয়া অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ সাতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা রেজাউল করিম ওই ক্লিনিকের পরিচালক। তবে সে চিকিৎসক পরিচয়ে অনেক সময় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেন। আর সে কৌশলে ক্ষমতা দেখিয়ে বিভিন্ন রোগীকে ক্লিনিকে জোরপূর্বক ভর্তিও করেন। এ বিষয়ে জানার জন্য ক্লিনিক পরিচালক ডা. রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমার ক্লিনিকে অপারেশন করা হয়নি বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান । উজিরপুর উপজেলা স্বাস্হ্য ও প: প: কর্মকর্ত শওকত আলী জানান অভিযোগ পেলে ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে। উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জাফর আহমেদ জানান মরাদেহ উদ্ধার করে বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।