মুরগির বিভিন্ন খামার সূত্রে জানা যায়, মুরগি পালনের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোলট্রিশিল্প সমিতির মহাসচিব খোন্দকার মো. মোহসিন কালের কণ্ঠকে বলেন, তীব্র দাবদাহ ও বিদ্যুিবভ্রাটের কারণে মুরগির অস্বাভাবিক মৃত্যু হচ্ছে। এখন মৃত্যুহার একটা পর্যায়ে রয়েছে। সামনে তা আরো বাড়তে পারে। মুরগির ওভারি বা ডিম্বাশয় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই মুরগিগুলো দু-এক সপ্তাহ পরে মারা যেতে পারে। প্রচণ্ড তাপ থেকে মুরগি বাঁচাতে বৈদ্যুতিক জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু বাজারে মুরগির সেই দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে কমেছে মুরগি ও ডিমের চাহিদা। ফলে উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে ডিম ও মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা।
পোলট্রিশিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক সাড়ে চার কোটি থেকে পাঁচ কোটি পিস ডিম উৎপাদিত হয়। দেশে মোট বাণিজ্যিক পোলট্রি খামার দুই লাখ পাঁচ হাজার। এর মধ্যে নিবন্ধিত পোলট্রি খামার ৮৫ হাজার ২২৭টি। ছোট-বড় শতাধিক হ্যাচারি ও ১০টি জিপি (গ্র্যান্ড প্যারেন্ট) ফার্ম রয়েছে।
এসব ছোট-বড় হ্যাচারি থেকে প্রতি সপ্তাহে গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ ব্রয়লার বাচ্চা ও প্রায় চার-পাঁচ লাখ লেয়ার বাচ্চা উত্পন্ন হয়, যার মাধ্যমে মুরগি লালন-পালন করে দৈনিক প্রায় ১০ হাজার টন মুরগির মাংস উৎপাদিত হয়। কিন্তু দাবদাহের কারণে মুরগির মাংস উৎপাদন কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে খামারিদের সুরক্ষায় নানা পদক্ষেপের কথা জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার নজরুল ইসলাম।
কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘মুরগি মারা যাওয়ার বিষয়গুলো আমাদের নজরে এসেছে। জেলার প্রতিটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে পশু ও পাখি (মুরগি) খামারের তথ্য সংগ্রহের জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করেছি। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য নিয়মিত খামারিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেসব খামারে টিনের ছাউনি, তা ঠাণ্ডা রাখতে চটের বস্তা ভিজিয়ে টিনের চালে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। খামারের ভেতর বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে বলা হচ্ছে।’