মো: এমদাদুল কাসেম সেন্টু, উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় এক হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। পারিবারিক অসচ্ছলতাকে উপেক্ষা করে উজিরপুরের অদম্য মেধাবী ছাত্র মো: রমজান খান সাব্বির,সরকারি মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও টাকার অভাবে নিয়মিত ভাবে কলেজে ভর্তি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দরিদ্র্য পরিবারের সন্তান সাব্বিরের ডাক্তার হবার স্বপ্ন কি অপূর্ণ থেকে যাবে? উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দামোদরকাঠী গ্রামের ফিরোজ খানের শেষ সম্বল পৈত্রিক ১২ শতাংশ জমিতে বসতঘর করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। এদিকে সংসার চালাতে অন্যর জমিতে বর্গা চাষ করেন এবং অবসরে বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে ঘুরে লুঙ্গি ও গামছা ফেরি করে বিক্রি করে সংসারের ভরন পোষণ করে থাকেন। এমনই পরিবারের সন্তান সাব্বির প্রাথমিক পর্যায় থেকে মেধার পরিচয় দিয়ে ২০২১ সালে হস্তিশুন্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়ে সরকারি গৌরনদী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২৩ সালের এইচ এসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করে সরকারি মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগ লাভ করে। কিন্তু নিয়মিত ভর্তির সময় শেষ হতে চললেও ভর্তির টাকা জোগাড় করতে না পারায় সাব্বিরের দরিদ্র্য পিতা হতাশায় ভুগছে।
মেধাবী সাব্বির মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিবরনে বলেন পিতার অসচ্ছলতার কারনে শিক্ষাজীবনে কখনও প্রাইভেট পরতে পারিনি তবুও নিজের চেষ্টায় পরাশুনা চালিয়ে গেছি। এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করলে ডাক্তার হবার স্বপ্নে মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদন করি কিন্তু দরিদ্র্য পিতা কোচিং ক্লাস করার খরচ বহনে অপারগতায় প্রকাশ করলে একমাএ ছোটবোন উর্মির স্কুল থেকে উপহার পাওয়া এন্ড্রয়েড ফোনের সাহায্যে অনলাইনে মেডিকেল কলেজের ফ্রি কোচিং ক্লাশে অংশ নেই। বাবা ফিরোজ খান ছেলে সাব্বিরের আগ্রহ দেখে উপায়ন্ত না দেখে একটি এনজিও থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছেলের হাতে তুলে দেন, ওই টাকা দিয়ে সাব্বির কয়েকটি ক্লাস ও ভর্তি পরীক্ষার কাজ চালিয়ে যান এবং ২০২৪ সালের মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধায় ৪৭৪১তম হয়।
এবিষয়ে সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খান বলেন সংসার চালাতে কষ্ট হয় ছেলে মেয়ে লেখাপড়ায় ভালো রেজাল্ট করলেও তাদের মুখে ভালো খাবার তুলে দিতে পারিনি ভালো জামাকাপড় পরাতে পারিনা, দোচালা টিনের ঘর মেরামতের অভাবে ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানিতে বইপত্র ভিজে গেলেও তারা পরাশুনা চালিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ছেলে সাব্বিরের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন আমার কাছে আকাশকুসুম কল্পনাসম। তবুও দেশবাসীর দোয়া সহযোগিতা পেলে তার ডাক্তার হবার পুরনে সহায়ক হবে। এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন মেধাবী শিক্ষার্থী সাব্বিরে বিষয়ে খোজ খবর নেয়া হয়েছে তার ভর্তির ব্যপারে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়কে সার্বিক সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুর ৩ টায় উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অসহায় মেধাবী কলেজ ছাত্রকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইশরাত জাহান, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সুমন চৌধুরীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীগন।