নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় গুঠিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ওই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে উজিরপুর উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনারের দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গুঠিয়া ব্রীজ সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন ওয়েষ্টার্ণ বাংলাদেশ ব্রীজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে নিয়েছে যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম ও তার দলবল। জাইকার অর্থায়নে গুঠিয়া বন্দর সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ৪/২০১৯-২০ এলএ কেস এর মাধ্যমে ০.৫৮ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। সম্প্রতি অধিগ্রহণকৃত জমি দখল করে প্রকাশ্যে দিনের আলোতে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে টিনের ঘর উত্তোলন করেন সিরাজুল। এ সময় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমির হোসেন মল্লিক বাধা দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেন। এ ছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাধা দিলে তাদেরও নানাভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর গুঠিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমির হোসেন মল্লিক উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনারকে লিখিতভাবে এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু সেই অভিযোগপত্র এখনো ভূমি সহকারী কমিশনারের টেবিলে ফাইলবন্দী হয়ে রয়েছে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রহিম হাওলাদার বলেন, সিরাজ টাকার জোরে সবার মুখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ভূমি সহকারী কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখন যদি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ না করা হয়, তাহলে সে আরো বেপরোয়া হয়ে যাবে। সরকারি সব সম্পতি তার দখলে নিবে।
কে এই সিরাজ? ১৯৯৬ সালে এসএসসি পাশ করে সর্বহারা গ্রুপে যোগ দিয়ে অপরাধ জগতে পা রাখেন সিরাজুল ইসলাম। এরপরেই শুরু তার অপরাধ কর্মকান্ড। হঠাৎ করে তিনি লাপাত্তা হয়ে যায়। তারপর তিনি কক্সবাজারে চিংড়ি মাছের হ্যাচারিতে চাকরি করেন। ফাঁকে তিনি টেকনাফ থেকে ইয়াবা-গাঁজা এনে বরিশাল-বানারীপাড়া-গুঠিয়া, দায়েরহাটে জমজমাট মাদকের হাট বসান। রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যান। মাদক বিক্রির টাকায় বনে যান কোটি কোটি টাকার মালিক।তার নামে-বেনামে রয়েছে জমি। গুঠিয়া বন্দর ঘেষে করেছেন আলিশান বাড়ি।
এ ব্যাপারে গুঠিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, জমি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমার যত অর্থ সম্পদ তা কষ্ট করে করেছি। দখলবাজী করে করিনি। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। আমার সুনাম নষ্ট করতে মাদক ব্যবসার সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে দিচ্ছে। আমি মাদক ব্যবসা করি না।
এ ব্যাপারে উজিরপুর এর এসিল্যান্ড কে এম ইসমাম বলেন, উক্ত জমি মুলত সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন, আমি অভিযোগ পেয়ে তাদের চিঠি দিয়েছি অভিযুক্তর বিরুদ্ধে তারা ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন।